অনলাইনে চেক করার জন্য ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করছেন?? তাহলে আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম!! আজকে আমরা বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ই পাসপোর্ট নিয়ে আপনাদের সাথে কথা। আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে ই পাসপোর্ট অনলাইনে চেক করতে হয়। ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ প্রয়োজন হয়। ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজ প্রয়োজন হয় সেগুলো নিয়েও আপনাকে পূর্ণাঙ্গ একটি ধারণা দিব।
আপনি যদি নতুন পাসপোর্ট এর কথা চিন্তা করছেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি গুরুত্বসহকারে মনোযোগ দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখবেন। ই পাসপোর্ট এর বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে।
পাসপোর্ট বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য সুবিধা করে দিয়েছে। আগে মানুষ সাধন পাসপোর্ট করলেই পাঁচ বছর পর আবার সেটিকে পুনরায় রেনু করা লাগতো। কিন্তু এখন ই-পাসপোর্ট 10 বছর পরে পুনরায় সংশোধন করতে হবে। এছাড়াও পাসপোর্ট এর অনেক রকম সুবিধা রয়েছে।
ই-পাসর্পোটের সুবিধা
ই পাসপোর্ট এর অনেকগুলো অসুবিধার মধ্যে একটি হলো ইমিগ্রেশনের সময় পাসপোর্ট এর ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে খুব সহজেই ভেরিয়েশন করা যায়।
- এখানে ছবি,আঙ্গুলের ছাপ,আইরিশ,স্বাক্ষর ডিজিটাল ফরমেট ব্যবহার করা হয়।
- অনুমোদন পদ্ধতি ইলেকট্রনিক্স।
- কেন্দ্রীয় পারসোনালাইজেশন।
- তৎক্ষনাত মনিটরিং।
- আপটুডেট অপারেটিং ব্যবস্থা।
- অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবস্থা।
ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী:
ই পাসপোর্ট করতে হলে সবার আগে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। হারু কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য নিচে আমরা সংযুক্ত করছি দয়া করে দেখে নিন।
১। ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে।
২। ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।
৩। ই-পাসপোর্ট ফরমে কোন ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
৪। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ অনুযায়ী আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
৫। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারি যার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নাই, তার পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
৬। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ নম্নোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে-
(ক) ১৮ বছরের নিম্নে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ।
(খ) ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ
(গ) ২০ বছরের উর্ধে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক । তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
৭। তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়।
৮। দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।
৯। আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।
১০। ১৮ বছরের নিম্নের এবং ৬৫ বছরের উর্ধ্বে সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ০৫ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার।
১১। প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোজন করতে হবে।
১২। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও (GO)/এনওসি (NOC)/ প্রত্যয়নপত্র/ অবসরোত্তর ছুটির আদেশ (PRL Order)/ পেনশন বই আপলোড/সংযোজন করতে হবে যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ Website এ আপলোড থাকতে হবে।
১৩। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
১৪। দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট (VAT) সহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।
১৫। কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং (Consular and Welfare Wing) অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
১৬। বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
১৭। অতি জরুরী পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
১৮। (ক) দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ২ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
(খ) দেশের অভ্যন্তরে জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
(গ) দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
১৯। আবেদনের সময় মূল জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ (GO)/অনাপত্তি (NOC) প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।
২০। পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদশন করতে হবে।
২১। হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।
২২। ০৬ বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩ আর (3R Size) সাইজের ( ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রউন্ড ) ছবি দাখিল করতে হবে।
২৩। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জানাতে হবে। নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি, জিডি কপিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে ।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
পাসপোর্ট সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। প্রত্যেক পাসপোর্ট এর ভিন্ন সময় ও ভিন্ন ফি নেয়া হয়। সুবিধার্থে আমরা ই-পাসপোর্ট এর 10 বছর এবং পাঁচ বছর মেয়েদের দুটি পাসপোর্ট এর নিচে সংযুক্ত করছি।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ই-পাসপোর্ট ফি (১৫% ভ্যাট সহ)
48 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট
নিয়মিত ডেলিভারি: 4,025 টাকা
এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 6,325 টাকা
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,625 টাকা
48 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট
নিয়মিত ডেলিভারি: 5,750 টাকা
এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,050 টাকা
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 10,350 টাকা
64 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট
নিয়মিত ডেলিভারি: 6,325 টাকা
এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,625 টাকা
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 12,075 টাকা
64 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ ই-পাসপোর্ট
নিয়মিত ডেলিভারি: 8,050 টাকা
এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 10,350 টাকা
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 13,800 টাকা
ই-পাসপোর্ট কিভাবে ফি প্রদান করব
আপনি এই পাসপোর্টে যেভাবে ফি প্রদান করবেন। চাইলে সোনালী ব্যাংক, কিংবা অন্যান্য ব্যাংক পাসপোর্ট এর জন্য টাকা দেয়া হয়। সেখানে গিয়েও টাকা দিতে পারেন।
ই-পাসপোর্ট পেমেন্ট
ই-পাসপোর্ট ফি নিম্নলিখিত উপায়ে প্রদান করা যেতে পারে:
অনলাইন:
(ক) কার্ড (মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিবিবিএল নেক্সাস),
(খ) মোবাইল ব্যাংকিং (নগদ, বিকাশ, রকেট, ওকে ওয়ালেটস, ইউপে),
(গ) ইন্টারনেট ব্যাংকিং (ব্যাংক এশিয়া),
(d) ওয়ালেট (Dmoney, UPay)
ই-পাসপোর্ট কিভাবে চেক স্ট্যাটাস জানবেন
পাসপোর্ট করার পর সাধারণত ই-পাসপোর্ট চেক স্ট্যাটাস জানতে নিচের ছবিটি দেখতে পারছেন সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য যুক্ত করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। দেখে নিন আপনার পাসপোর্ট টা কি পর্যায় আছে।

ই-পাসপোর্ট কিভাবে ফি প্রদান করব
আশা করি আমাদের উপরের আলোচনা থেকে আজকে আপনি পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য জানতে পেরেছেন। এছাড়া যদি অনলাইনে আবেদন সম্পূর্ণ করার সময় কোন সমস্যায় পড়লে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন ধন্যবাদ।