আপনারা যারা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে রেগুলার ভিজিটর তাদের জন্যে আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। সেটা হল জমির খারিজ ফারম বা ই নামজারি মিউটেশন সম্পর্কে। একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনাকে এই আইনটি জানতে হবে। কারণ এই আইনের জমি সংক্রান্ত অনেক কিছু তথ্য আছে। যা অনেক সময় দেখা যায় নিজের জমি মামলা মোকদ্দমা হলে জমি খারিজ ফরম জ্ঞান অর্জন থাকতে হয়।
তাই এই পুরো বিষয়টি জানতে হলে নিচের পদক্ষেপগুলো ভালোভাবে দেখে নিবেন। এবং আমাদের জমি খারিজ কি এবং তার নাম জারি মোটিভেশন সম্পর্কে সকল তথ্য এখানে দেওয়া হবে। তাই বেশী কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে নেই জমি খারিজের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
নামজারি(Mutation) বা জমাখারিজ কি?
মূলত আমরা জমি খারিজ করার সময় নাম জারি। শব্দ টা শুনে থাকি কিন্তু আসলেই জানিনা এর নিয়মকানুনগুলো। মূলত খারিজ নামা বা নাম জারি মিউটেশন এই তিনটি শব্দ একই।
ই নামজারি আবেদন করার প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি
আপনি যখন কোনো জমি ক্রয় করে থাকেন সেক্ষেত্রে খতিয়ান দাগ টি পূর্বের মালিকের নাম এই থেকে। তাই এক্ষেত্রে এর সমাধান করতে হলে অবশ্যই আপনাকে দ্রুত যে জমিটি আপনারা ক্রয় করছেন তার খতিয়ান বৈধতা আপনার নামে রেকর্ড করতে হবে। অর্থাৎ প্রাপ্ত মালিকের সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে আবার নতুন করে আপনার নামে নাম জারি করতে। মূলত একেই বলা হয় নাম জারি বা খতিয়ান। মূলত আপনার পূর্বের মালিকের জমিকে নাম মৌজা এবং মৌজা নাম্বারের, জেল নাম্বার, জমির পরিমাণ, ইত্যাদি এগুলো দরকার পড়ে।
- মালিকানা দলিল
- উত্তরাধিকারী ব্যতীত অন্য হলে সেবা দান আদালতের বিক্রি নিলাম মালিকানার মূল দলিল সার্টিফিকেট কপি
- উত্তরাধিকারী হলে মালিকানার দলিল এবং ওয়ারিশ সনদ
- এলাকাভেদে সর্বশেষ খাটিয়ান সিএস এস এ আর এস
- হালসন পর্যন্ত খাজনার দাখিলা
- বায়া দলিল
- বায়া খতিয়ান
- ছবি
- আইডি কার্ড
ই- নামজারি অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া/Land mutation in Bangladesh
ডিজিটাল পদ্ধতিতে এখন বর্তমানে নামজারি খতিয়ান অনলাইন এর মাধ্যমে করা হয়। আগে যেমন রেজিস্ট্রি অফিসে এগুলো করা যেত এখন আপনি চাইলে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে ফরমের সাহায্য করতে পারবেন। এটি মূলত ভূমি অফিস থেকে গৃহীত সংশোধন করা হয়। নিচে আরও অনলাইনে কিভাবে আবেদন করবেন তার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি দেওয়া হল।
১। বিভাগঃ আপনার নিজস্ব সিলেক্ট করতে হবে
২। জেলাঃ আপনার নিজস্ব জেলা সিলেক্ট করতে হবে
৩। উপজেলাঃ আপনার নিজস্ব উপজেলা
৪। মৌজাঃ মৌজা সিলেক্ট করতে হবে
৫। আর.এস, বি.এসঃ এলাকাভেদে সর্বশেষ খতিয়ান সিলেক্ট করতে হবে
৬। খতিয়ান নংঃ খতিয়ান নং সিলেক্ট করতে হবে
৭। দাগ নং, জমির পরিমাণ ও কত শতক তা সিলেক্ট করতে হবে
৮। দলিল/ মামলা নংঃ আপনার দলিল নাম্বার দিতে হবে
৯। তারিখঃ কত তারিখে দলিলটি করবেন তার তারিখ সিলেক্ট করতে হবে
১০। সাব রেজিস্টার অফিসের নামঃ সাব রেজিস্ট্রিার অফিস সেখানে লিখতে হবে।
১১। আরোওঃ আপনাদের যদি একাধিক পরিমাণ দলিল থেকে থাকে তাহলে আরোও নামের অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
১২। আবেদিত মোট জমির পরিমাণ(একর): আপনার জমির পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। এবং তা কথায় লিখতে হবে।
১৩। আরও খতিয়ান সংযুক্ত করুনঃ রেকর্ডিং খতিয়ান যদি আপনার একাধিক হয় তাহলে সেখানে একটি অপশন পেয়ে যাচ্ছেন, আর ও খতিয়ান সংযুক্ত করুন এই অপশন টি ক্লিক করুন।
যে জমিটি বিক্রি করছে তার ক্ষেত্রে নিচের বিষয়টি প্রযোজ্য হবে
আবেদনকারীর তথ্য
১। আবেদনকারীর নামঃ এখন আপনার নামটি দিয়ে দিবেন।
২। পিতা/স্বামীর নাম এবং পূর্ণ ঠিকনাঃ আপনার পিতা নাম এখানে দিতে হবে।
৩। মোবাইল নংঃ আপনার ফোন নাম্বারটি প্রদা করুন
৪। ইমেইলঃ যদি থেকে থাকে তাহলে দিতে পারেন।
৫। ন্যাশনাল আইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধনঃ ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নাম্বার টা প্রদান করুন।
৬। পাসপোর্ট সাইজের ১ কপি ছবিঃ আপনার পাসপোর্ট সাইজের ১ কপি ছবি প্রান করুন।
যাদের নাম হতে কর্তন হবে/ ২য় পক্ষের(বিবাদি) নাম ও পূর্ণ ঠিকনা
১। বিবাদির নামঃ যার কাছ থেকে সর্বশেষ জমিটি ক্রয় করছেন তার নাম এখানে উল্লেখ করবেন।
২। বিবাদীর পিতা/স্বামীর নাম এবং পূর্ণ ঠিকানাঃ বিবাদীর পিতার নাম দিবেন।
৩। মোবাইল নংঃ তাদের মোবাইল নম্বরটি এখানে উল্লেখ করবেন।
৪। স্বাক্ষরঃ কাগজের মধ্যে সাক্ষর টি দিয়েছেন সেটা এখানে আপলোড করে দিতে হবে।
আপনি যদি আমাদের উপরের প্রক্রিয়া গুলো মনোযোগ সহকারে দেখেন তাহলে অবশ্যই অনলাইনে আপনি নামজারী বা খারিজ করতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা উপরের চিত্রের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছি। আশা করি পরবর্তী সময়ে আবেদন করার পর আপনার কোন রকম সমস্যায় পড়তে হবে না। যদি আবেদন করার সময় কোন বিষয় না বুঝতে পারেন অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন।