আসসালামুয়ালাইকুম বাংলাদেশের আপনি যদি নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যারা ইন্টারনেটে পাসপোর্ট অফিসের হেল্প লাইন নাম্বার ইমেইল অ্যাড্রেস ও ঠিকানা এছাড়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করলে আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। কারণ আজকে আমরা পাসপোর্ট সংক্রান্ত কিছু তথ্য আপনাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করব।
পাসপোর্ট হচ্ছে এক কথায় নিজের দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার পরিচয় পত্র। সাধারণত ভাবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় গ্রাহকদের জাতীয়তা পরিচয় হিসেবে পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়। আপনি যদি বিদেশে ভ্রমণ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে এবং সে দেশের ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে হবে। এছাড়াও কোন দেশে ভ্রমণের সময় এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন এর মাধ্যমে পাসপোর্ট যাচাই করা হয়। সুতরাং পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে।
পাসপোর্ট কি?
পাসপোর্ট বলতে বোঝায় কোন দেশের ভ্রমণের সময় ব্যক্তিগত যে জাতীয় পরিচয় পত্র বহন করে সেটি পাসপোর্ট হিসেবে বলা যায়। অর্থাৎ আপনি এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজ দেশের নাগরিকত্ব বহনকারী পরিচয় পত্র।
পাসপোর্ট সম্পর্কে তথ্য
বর্তমানে আধুনিক যুগে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের মতো ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে। থাকি আপনি যে পাসপোর্ট পাঁচ বছরের মধ্যে রেনু করতে হতো। কিন্তু এখন e-passport আন্তর্জাতিক ভাবে 10 বছর মেয়াদ করানো হয়েছে। পাসপোর্টে সাধারণত নাগরিকের নাম পিতার নাম এবং মাতার নাম জন্ম তারিখসহ বিস্তারিত তথ্য সংযোগ থাকে। 2008 সালের ডিসেম্বর মাসে মোট 30 বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট চালু করা হয়েছিল। এবং 2017 সালে এপ্রিল মাসে 96 টিদেস পাসপোর্ট চালু করে। কেউ যদি প্রশ্ন করেন প্রথম পাসপোর্ট কবে চালু হয় তাহলে আমি বলবো প্রথম পাসপোর্টটি চালু হয় 1866 সালে সেটি জাপান চালু করে।
বাংলাদেশ পাসপোর্ট সম্পর্কে
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর কর্তৃক আইসিএ অনুগামী ও মেশিনের রিডাবল, এবং বায়োমেট্রিক ই-পাসপোর্ট পাসপোর্টধারীদের বিদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে একটি পরিচয় বহন করা হয় সেটি পাসপোর্ট হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকদের দেওয়া হয়। আপনারা জানলে হয়তো খুশি হবেন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে এই প্রথম যে দেশ প্রত্যেক নাগরিকের জন্য পাসপোর্ট চালু না করেন। ই-পাসপোর্ট সতনত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এর মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়।
- প্রচলন শুরুর তারিখ: ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩
- ১ এপ্রিল ২০১০: (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট)
- ২২ জানুয়ারি ২০২০: (ই-পাসপোর্ট)
- প্রদানকারী সংস্থা: বাংলাদেশ
- ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর
- প্রদানের যোগ্যতা: বাংলাদেশী নাগরিকত্ব
- মেয়াদ : ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সীদের জন্য ১০ বছর মেয়াদী।
- ১৮ বছরের কম বয়সী বা ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ৫ বছর মেয়াদী।
পাসপোর্ট এর প্রকারভেদ:
- বাংলাদেশি যোগ্য নাগরিক দের কোন ধরনের পাসপোর্ট প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশ সরকার তিন ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করেন। এগুলো হলো কূটনীতিক, দাপ্তরিক এবং সাধারণ পাসপোর্ট।
- সাধারণ পাসপোর্ট সবুজ মলাট )এটা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সাধারণ নিয়মিত নাগরিকদের জন্য জারি করা হয়। যেমন ছুটি, অধ্যয়ন, ব্যবসা ভ্রমণ ইত্যাদি।
- দাপ্তরিক পাসপোর্ট, নীল মলাট) সরকারী কর্মচারী, সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারী ব্যবসায়ের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের জারি করা হয়েছে।
- কূটনৈতিক পাসপোর্ট লাল মলাট ) বাংলাদেশি কূটনীতিকদের শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনৈতিক কুরিয়ার জারি করা হয়।
পাসপোর্ট অফিসের হেল্প লাইন নাম্বার
পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রাথমিকভাবে কোন কিছু জানার স্বার্থে আপনারা চাইলে পাসপোর্ট অফিসের হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। জন্য আমরা পাসপোর্ট অফিসের হেল্প লাইন নাম্বার টি নিচের সংযুক্ত করছি।
- পাসপোর্ট অফিস হেল্প লাইন নাম্বার: ০২-৮১২৩৭৮৮
পাসপোর্ট অফিসের সদর দপ্তর ঠিকানা
অনেকেই আছেন যারা পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সদর দপ্তর অফিস এর প্রয়োজন হয়। পাসপোর্ট অফিসের সদর দপ্তর টিকানা জানতে হলে নিচের ঠিকানাটা ভালভাবে দেখুন।
- বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, ঢাকা
- ঠিকানা: ই-৭, আগারগাও সেরে-ই-বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ ১২০৭ ।
- মোবাইল: ০১৭৩৩-৩৯৩৩২৩ ।
ইমেইল এড্রেস পাসপোর্ট অফিস
পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগের মাধ্যম আর একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হল ইমেইল দিয়ে তাদেরকে যে কোন তত্ত্ব সংক্রান্ত এবং প্রাথমিকভাবে সমস্যা কথা আপনি ইমেইলে পাঠাতে পারবেন।
- ইমেল ঠিকানা: inquiry@passport.gov.bd
পাসপোর্ট হেড অফিসের ঠিকানা
পাসপোর্ট এর হেড অফিস সাধারণত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত। কেউ যদি পাসপোর্ট নিয়ে নাম সংক্রান্ত বা যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে আপনারা চাইলে পাসপোর্ট হেড অফিসে আসতে পারেন। ঠিকানাটি দাওয়া হল।
- ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট বিভাগ
- 7-ই আগারগাঁও
- শেরে-ই-বাংলা নাগর
- ঢাকা-1207, বাংলাদেশ
পাসপোর্ট অফিসের হটলাইন নাম্বার গুলি
আপনাদের সুবিধার্থে নিচে আমরা পাসপোর্ট অফিসের হটলাইন নাম্বার চারটি সংযুক্ত করছি। এদের মধ্যে তথ্য সেবার জন্য প্রাথমিকভাবে একটি হটলাইন নাম্বার, জরুরি সেবার জন্য একটি হটলাইন নাম্বার, প্রদ্যুত বা দুর্নীতির জন্য একটি হট লাইন নাম্বার, এবং সার্বক্ষণিক হেল্পডেস্ক নাম্বারটি নিচে সংযুক্ত করা হলো।
- তথ্য সেবা-৩৩৩
- জরুরি সেবা-৯৯৯
- দুদক-১০৬
- হেল্প ডেস্ক-০১৭৩৩৩৯৩৩৯৯
ই পাসপোর্ট করার ফি
পাসপোর্ট সাধারণত অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে আবেদন করতে হবে এবং এই ফি প্রদানের ক্ষেত্রে আপনি চাইলে অনলাইনেও দিতে পারেন কিংবা যেকোন ব্যাংক ওয়ান ব্যাংক, এশিয়া ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ফি জমা দিতে পারেন।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ই পাসপোর্ট ফি:
48 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 4,025 টাকা
- 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 6,325 টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 8,625 টাকা
48 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 5,750 টাকা
- 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,050 টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 10,350 টাকা
64 পৃষ্ঠা এবং 5 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 6,325 টাকা
- 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 8,625 টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 12,075 টাকা
64 পৃষ্ঠা এবং 10 বছরের মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- 21 দিনের মধ্যে নিয়মিত ডেলিভারি: 8,050 টাকা
- 10 দিনের মধ্যে এক্সপ্রেস ডেলিভারি: 10,350 টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস 2 দিনের মধ্যে ডেলিভারি: 13,800 টাকা
আশা করি আমাদের উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। এছাড়া আপনার যদি অন্যান্য কোন মতামত কিংবা পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোন সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রাথমিকভাবে আমাদের ওয়েবসাইটে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন কিংবা সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।